ওষুধকে উপেক্ষা করে এই দেশে চিকিৎসা হয় গায়ে আগুন জ্বালিয়ে

নিউজ ডেস্ক: চিকিৎসার জন্য ঔষধ বা জরিবুটির কথা তো আমরা সবাই জানি। তবে কখনও শুনেছেন অসুস্থ মানুষকে সুস্থ করার জন্য গায়ে আগুন জ্বালিয়ে তার চিকিৎসা…

Fire Therapy

নিউজ ডেস্ক: চিকিৎসার জন্য ঔষধ বা জরিবুটির কথা তো আমরা সবাই জানি। তবে কখনও শুনেছেন অসুস্থ মানুষকে সুস্থ করার জন্য গায়ে আগুন জ্বালিয়ে তার চিকিৎসা করা হচ্ছে। হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছেন! চিনে ঠিক এমনই কিছু হয়। গায়ে আগুন লাগিয়ে চিকিৎসা করার পদ্ধতিকে চীন ‘ফায়ার থেরাপি’ নামে চেনে। প্রায় ১০০ বছরের বেশী সময় ধরে চীন চিকিৎসার জন্য এই থেরাপি ব্যবহার করে এসেছে।

চিনে একাধিক অসুখের চিকিৎসার জন্য এই ‘ফায়ার থেরাপি’ ব্যবহার করা হয়। এই পদ্ধতির মাধ্যমে যারা মানুষের চিকিৎসা করে থাকেন তাদের কে ঝাং ফেঙ্গাও বলা হয়। নিজেদের কাজের জন্য এরা যথেষ্ট বিখ্যাত। চীনের কিছু মানুষ ফায়ার থেরাপিকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা হিসেবে মনে করে। চীনবাসীরা দাবি করে এই চিকিৎসার মাধ্যমে মানসিক অবসাদ, বদহজম থেকে নিয়ে ক্যান্সারের মতো অসুখের চিকিৎসা করা সম্ভব। আগুন দিয়ে চিকিৎসা করার এই পদ্ধতি চীনের প্রাচীনতম বিধি। এর মাধ্যমে শরীরে গরম এবং ঠান্ডার মাঝে সামঞ্জস্য বজায় রাখার ওপর জোর দেওয়া হয়।

বলা হয় ফায়ার থেরাপিতে অসুস্থ মানুষের পিঠে প্রথমে জরিবুটি দিয়ে তৈরি একটি প্রলেপ লাগানো হয়। তার ওপর একটা তোয়ালে দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয় ।তারপরে এই তোয়ালের ওপর জল এবং অ্যালকোহল ছিটিয়ে দেয়া হয়। এরপর অসুস্থ মানুষটির শ্বরীরে আগুন দিয়ে দেওয়া হয়। তবে এই ‘ফায়ার থেরাপি’ কে নিয়ে বিভিন্ন সময়ে একাধিক প্রশ্ন উঠেছে ।এই প্রশ্নগুলির মধ্যে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হল এই চিকিৎসা যারা করে থাকেন তাদের কাছে বৈধ কোন সার্টিফিকেট হয়েছে কিনা? বা বৈধ কোনও প্রশিক্ষণ তারা নিয়েছেন কিনা ?।এই ধরনের চিকিৎসা করার সময় যদি কোন দূর্ঘটনা ঘটে যায় তাহলে তার জন্য কি ধরনের সুরক্ষা ব্যবস্থা নেওয়া হয়ে থাকে?

এই বিষয় নিয়ে ঝাং ফিঙ্গাও বলে থাকেন একাধিকবার মানুষ এইভাবে চিকিৎসা করাতে গিয়ে আহত হয়েছেন। অনেক সময় অসুস্থ মানুষের শরীর এবং মুখের অন্যান্য জায়গা পুড়ে গেছে। কিন্তু এইগুলো সঠিক ভাবে ফায়ার থেরাপি ব্যবহার না করার কারণে হয়েছে বলে তারা দাবি করে থাকেন।ঝাং ফিঙ্গাও বলে থাকেন আমরা হাজার হাজার মানুষের ফায়ার থেরাপির মাধ্যমে চিকিৎসা করেছি। সঠিক পদ্ধতি জানা থাকলে এমন কোন দুর্ঘটনা হবে না বলেই দাবি করে থাকেন তারা।

ঝাং ফিঙ্গাওরা বলে থাকেন ‘ফায়ার থেরাপি’ মানব ইতিহাসের চতুর্থ বড় ক্রান্তি। এই থেরাপির মাধ্যমে চিনি এবং পশ্চিমে চিকিৎসার পদ্ধতিগুলিকে অনেক পিছনে ছেড়ে দিয়েছে। তাদের দাবি ভয়ঙ্কর কিছু অসুখের চিকিৎসার জন্য অনেক সময় মানুষ অর্থ ব্যয় করতে অসমর্থ হয়। সে ক্ষেত্রে ‘ফায়ার থেরাপি’ তাদের জন্য যথেষ্ট উপযোগী এবং তুলনামূলক অনেকটাই সাশ্রয়কর বলে দাবি করেন তাঁরা।