Bangladesh: দুর্গামণ্ডপ ভাঙচুরের ঘটনায় দোষীরা শাস্তি পাবেই জানালেন শেখ হাসিনা

নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশে দুর্গামণ্ডপে হামলার ঘটনায় দোষী কেউ ছাড় পাবেনা। কুমিল্লায় দুর্গামণ্ডপে হামলার কড়া নিন্দা করে জানালেন শেখ হাসিনা। করোনা সংক্রমণের কারণে ভিডিও কনফারেন্স ঢাকেশ্বরী…

Sheikh Hasina

নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশে দুর্গামণ্ডপে হামলার ঘটনায় দোষী কেউ ছাড় পাবেনা। কুমিল্লায় দুর্গামণ্ডপে হামলার কড়া নিন্দা করে জানালেন শেখ হাসিনা। করোনা সংক্রমণের কারণে ভিডিও কনফারেন্স ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে দুর্গা দর্শন করেন তিনি।

ভিডিও বার্তায় শেখ হাসিনা বলেন, কুমিল্লার ঘটনার তদন্ত হচ্ছে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। ‘যারা এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের কোনও ছাড় দেওয়া হবে না। যে ধর্মের হোক না কেন বিচার করা হবে।’

বাংলাদেশে ধর্মীয় উস্কানিমূলক বার্তা দিয়ে দুর্গাপূজা মণ্ডপে হামলা, ভাঙচুর ও সাম্প্রদায়িক বৈরি পরিবেশ তৈরিতে জড়িতদের চিহ্নিত করতে ভিডিও ও সোশ্যাল সাইটের ফুটেজের সাহায্য নিচ্ছে পুলিশ। উৎসব পরিবেষকে ষড়যন্ত্র করে নষ্ট করায় অন্তত ৪৬ জন ধৃত। তবে এই সংখ্যা আরও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। ২৪টি জেলায় বর্ডার গার্ড টহল চলছে।

Sheikh Hasina

বুধবার দিনভর দুর্গাপূজা ভণ্ডুল করে কুমিল্লা ও চাঁদপুরে হামলা চালানো হয় দুর্গামণ্ডপ ও মন্দিরে। সোশ্যাল সাইটে ছড়ানো হয় কুমিল্লায় দুর্গামণ্ডপে মূর্তির নিচে কোরান শরিফ রাখা আছে। এর জেরে হামলা শুরু হয়। হামলা রুখতে পুলিশ গুলি চালায়। কয়েকজন জখম হয়। আর চাঁদপুরে মন্দিরে হামলা রুখতে পুলিশ আরও কঠোর ভূমিকা নেয়। বিবিসি জানাচ্ছে, চার জন মৃত। তারা গুলিবিদ্ধ। গুলি চালানোর বিষয়ে নীরব পুলিশ।

দুটি জেলায় সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর হামলার ঘটনায় রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা চলছে। জানিয়েছেন বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানান, দোষীদের চিহ্নিত করার কাজ চলছে। কেউ ছাড় পাবে না। চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মহম্মদ আনোয়ার হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে বলেন, কুমিল্লার ঘটনাটি অবশ্যই উস্কানিমূলক।
বাংলাদেশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশে দুর্গাপূজার নিরাপত্তা রক্ষার্থে দেশব্যাপী বিভিন্ন জেলায় বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে‌। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ পরিচালক (অপারেশন) লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফয়জুর রহমান জানান, প্রয়োজন হলে রাজধানী ঢাকাতেও বিজিবি মোতায়েন করা হবে।

বুধবার দুর্গাপূজার অষ্টমী অনুষ্ঠানের আগে সোশ্যাল সাইটের গুজব ছড়ানো হয়, কুমিল্লায় একটি পূজামণ্ডপে মূর্তির নিচে পবিত্র কোরান শরিফ গ্রন্থ রেখে মুসলমান সম্প্রদায়ের অবমাননা করা হয়েছে। কিছু ছবি দ্রুত ছড়ায় ফেসবুকে। এর পরেই কয়েকটি দুর্গামণ্ডপে হামলা হয়। হামলাকারীদের থামাতে গুলি চালায় পুলিশ। কয়েকজন জখম হন। রক্তাক্ত সেই ছবি দেখে উত্তেজনা আরও বাড়ে। এর কিছু পরেই সোশ্যাল সাইটে স্থানীয় কয়েকজন মুসলিম যুবক পোস্ট করেন, কীভাবে দুর্গামণ্ডপ কে ধর্মীয় ষড়যন্ত্রের নিশানা করা হয়। তাদের পোস্ট থেকে স্পষ্ট হয় একটি গোষ্ঠী ইচ্ছাকৃত এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। তদন্তে নেমে কুমিল্লা জেলা পুলিশ জানতে পারে সবই ছিল ধর্মীয় উস্কানি। কুমিল্লার পরিস্থিতি শান্ত হতে না হতেই চাঁদপুর জেলায় শুরু হয় গুজব পোস্ট ঘিরে দুর্গামণ্ডপ ও মন্দিরে হামলা। হামলাকারীদের রুখতে কড়া ভূমিকা নেয় পুলিশ।

বাংলাদেশ ধর্ম মন্ত্রকের জরুরি ঘোষণায় বলা হয়েছে, “কুমিল্লায় পবিত্র কোরআন অবমাননা সংক্রান্ত খবর আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। খবরটি খতিয়ে দেখার জন্য ইতোমধ্যে আমরা স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ প্রদান করেছি। ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্ট করার উদ্দেশ্যে যে কেউ এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকুক তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। তবে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কেউ আইন হাতে তুলে নেবেন না। সবাইকে ধর্মীয় সম্প্রীতি ও শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য অনুরোধ করা হলো।”