পেনসিলভেনিয়ার বিলবোর্ডে তালিবানযোদ্ধা ‘বাইডেন’, আফগান-সমস্যার সমালোচনার মুখে প্রেসিডেন্ট

নিউজ ডেস্ক: একমাস আগেই আফগানিস্তানের দখল নিয়েছে তালিবানরা (Taliban)। তাজিকিস্তানে আশ্রয় নিয়েছিলেন দেশের প্রেসিডেন্ট ঘানি। তারপরেই বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনর পদত্যাগ দাবি করেছিলেন প্রাক্তন…

নিউজ ডেস্ক: একমাস আগেই আফগানিস্তানের দখল নিয়েছে তালিবানরা (Taliban)। তাজিকিস্তানে আশ্রয় নিয়েছিলেন দেশের প্রেসিডেন্ট ঘানি। তারপরেই বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনর পদত্যাগ দাবি করেছিলেন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে কার্যত দু’ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্প সোজাসুজি জানিয়ে দেন, “আফগানিস্তানে যে লজ্জাজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তার জন্য প্রেসি়ডেন্ট জো বাইডেনের উচিত পদত্যাগ করা।”

এবার আবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার নিয়ে বাইডেনের সমালোচনায় দেশবাসীর একাংশ। পেনসিলভেনিয়ার বিলবোর্ডে প্রকাশ পেল সেই বাইডেন বিরোধী অভিব্যাক্তিই। বাইডেনকে তালিবান জঙ্গি সাজিয়ে ওই বিলবোর্ডে লেখা হয়েছে ‘তালিবানদের আবার শ্রেষ্ঠ আসন দাও (Making Taliban Great Again)’। গোটা পেনসিলভেনিয়াই ছেঁয়ে গিয়েছে এরকম বিলবোর্ডে। যদিও এর পেছনে ট্রাম্প নন, মাস্টারমাইন্ড একজন প্রাক্তন পেনসিলভানিয়া রাজ্য সিনেটর, স্কট ওয়াগনার। যিনি একজন রিপাবলিকান এবং ২০১৪ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত ইয়র্ক কাউন্টির অন্তর্ভুক্ত একটি জেলার প্রতিনিধিত্ব করেছেন।

আমেরিকার ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে ৯/১১ হামলার পরই তাদের ন্যাটো বাহিনী দখল নেয় আফগানিস্তানের। প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় আফগান সেনাদের, জেলবন্দি করা হয় তালিবানদের। বিশ্বজুড়ে আল কায়েদার যে দাপট ছিল, তাও নিয়ন্ত্রণে আনে মার্কিন সেনা। লক্ষ্য ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সন্ত্রাসমুক্ত করা। কিন্তু ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তালিবানদের সঙ্গে দোহায় চুক্তি করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই চুক্তিতে বলা হয়, আফগানিস্তান থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে মার্কিন সেনা, কিন্তু আমেরিকায় সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ বন্ধ রাখবে তারা। অন্য সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীকে আমেরিকায় হামলা করা থেকে বিরত রাখারও চেষ্টা করবে তালিবানরা।

এই চুক্তির পরেই নির্বাচনে হেরে যান ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট হিসাবে ক্ষমতায় বসেন জো বাইডেন। কিন্তু, ক্ষমতায় এসেও তিনি ট্রাম্পের সিদ্ধান্তকেই পূনর্বহাল রাখেন। উল্টে জানান, এই বছরের সেপ্টেম্বরের আগেই আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। অনেক আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞই ভেবেছিলেন, তালিবানদের বাড়বাড়ন্ত দেখে সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখবেন বাইডেন। কিন্তু সিদ্ধান্ত না বদলে বাইডেন জানান, “আফগান নেতাদের একজোট হতেই হবে। আফগানিস্তানের সেনার সংখ্যা তালিবানদের তুলনায় অনেক বেশি। তাদের দেশের জন্য লড়াই চালাতেই হবে।”

সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজকে এক ইমেলে ওয়াগনার জানিয়েছেন, “প্রেসিডেন্ট বাইডেন তাড়াহুড়ো করেছে। তার সিদ্ধান্ত আমাদের বিশ্বের কাছে হাসির খোরাক করে তুলেছে। তালিবানরা খোলাখুলিভাবে বলছে যে তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে আফগানিস্তান থেকে বের করে দিয়েছে।” তিনি কাউকে ভয় পান না এবং সত্যিটা সবার সামনে আনতে চান বলে ওয়াগনার জানিয়েছেন যে বিলবোর্ডগুলি এখনই নামানো হবে না। কমপক্ষে আরও দু’মাসের জন্য গোটা পেনসিলভেনিয়ার মানুষ ওগুলো দেখতে পাবেন।