শরিয়তি আইনে চলা আফগানিস্তান থেকে উইঘুর মুসলিমদের চিনে পাঠাবে তালিবান

নিউজ ডেস্ক: উইঘুর মুসলিম অধ্যুষিৎ অঞ্চলের আগের নাম ‘পূর্ব তুর্কিস্তান’। বর্তমান এই অঞ্চল চিনের জিনজিয়াং প্রদেশে। ৯০ লাখ মুসলিম অধ্যুষিত এ অঞ্চলের প্রায় ১০ লাখ…

নিউজ ডেস্ক: উইঘুর মুসলিম অধ্যুষিৎ অঞ্চলের আগের নাম ‘পূর্ব তুর্কিস্তান’। বর্তমান এই অঞ্চল চিনের জিনজিয়াং প্রদেশে। ৯০ লাখ মুসলিম অধ্যুষিত এ অঞ্চলের প্রায় ১০ লাখ উইঘুর নারী-পুরুষ বন্দি রয়েছে বন্দি শিবিরে। চিন সরকার এ বন্দি শিবিরকে ‘চরিত্র সংশোধনাগার’ নাম দিয়েছে। চরিত্র সংশোধনাগারের নামে চিন সরকার এ সব মুসলিমদের প্রতি চরম অত্যাচার ও নির্যাতন করছে।

আরও পড়ুন আফগানিস্তানে তালিবানি পতাকা কেনার হিড়িক, জঙ্গি বিরোধী পঞ্জশির বলছে না

অন্যদিকে তালিবানি শাসন কায়েম হয়েছে আফগানিস্তানে। ক্ষমতায় এসেই তালিবান জানিয়েছে, ইসলামের শরিয়তি আইন অনুসারেই এবার থেকে দেশ চলবে। আফগানিস্তানের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে ‘ইসলামিক ইমিরেটস অব আফগানিস্তান”। একদিকে আফগানিস্তানের জনগন যেমন মুসলিম নীতির আতঙ্কে রয়েছেন, অন্যদিকে আতঙ্কে ভুগছেন উইঘুর মুসলিমরাও। আফগানিস্তানে উইঘুর সম্প্রদায়ের প্রায় হাজার দুয়েক পরিবারের বাস। যাদের চিনে পাঠিয়ে দেওয়া হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্বের একাধিক মানবাধিকার সংগঠন।

প্ল্যাকার্ড হাতে জিনপিং সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন এক মুসলিম।

কিন্তু একদিকে ইসলামিয় নীতি মেনে চলছে তালিবানরা। অন্যদিকে চিন বহুদিন ধরেই মুসলিমদের ওপর অকথ্য অত্যাচার করছে। তাও সেখানেই কেন উইঘুর মুসলিমদের পাঠাবে তালিবান?

সংবাদ সংস্থা এএনআইকে মানবাধিকার সংগঠন উমর উইঘুর ট্রাস্টের সভাপতি মহম্মদ উইঘুর জানিয়েছেন, “এখন তালিবানের হাতেই আফগানিস্তানের সমস্ত ক্ষমতা রয়েছে। আর তালিবানদের ক্ষমতায় আসার পেছনে চিনের মদত রয়েছে।” কয়েকদিন আগেই একটি রিপোর্ট তৈরি করেছিল উইঘুর হিউম্যান রাইটস প্রজেক্ট এবং অক্সাস সোসাইটি ফর সেন্ট্রাল এশিয়ান অ্যাফেয়ার্স। সেই রিপোর্টে লেখা হয়, “চিনের তরফে তালিবানরা উইঘুরদের উপর অত্যাচার চালাচ্ছে। চিনে বহু উইঘুরদের হত্যা করা হয়েছে। বন্দী শিবিরেও পাঠানো হয়েছে। অন্যান্য এলাকায় তাদের উপর কড়া নজর রাখা হচ্ছে। একই কাজ করা হচ্ছে আফগানিস্তানেও।”

আরও পড়ুন আফগানিস্তানে জঙ্গি সরকারকে সমর্থনে বিশ্ব দোদুল্যমান

উইঘুদের ওপর অত্যাচার, মুসলিম ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ধ্বংসে কি কি করছে চিন ?

  •  জিনজিয়াং প্রদেশের কোনো পুরনো মসজিদ সংস্কার করতে না দেয়া। তাছাড়াও নতুন মসজিদ নির্মাণের অনুমোদন না দেয়া।
  •  প্রকাশ্যে ধর্মীয় শিক্ষা নিষিদ্ধ করা।
  •  পবিত্র হজযাত্রার অনুমতি না দেওয়া।
  •  নামাজ পড়ার সময় এক হাজার মুসলিমের জন্য একশ পুলিশ মসজিদ ঘিরে রাখে।
  • প্রাচীন মসজিদগুলিতে মুসলিমদের নামাজ পড়তে না দেওয়া।
  • মুসলিম মেয়েদের অবৈধভাবে গর্ভপাত করানো হচ্ছে। 
  • ১৯৯৬ সাল থেকে জিনজিয়াং প্রদেশের ৪০টি শহর ও গ্রামে অবস্থিত মাদ্রাসার ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ফলে শিক্ষার অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে মুসলিমদের।
  • জিনজিয়াংয়ে মুসলমানদের তুর্কি ভাষা ও আরবি বর্ণমালা ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।