তালিবান সরকার ইস্যু: পুতিন-মোদী আলোচনার পর প্রশ্ন ‘সমর্থন ইঙ্গিত’

নিউজ ডেস্ক: আফগানিস্তানে তালিবান নিয়ন্ত্রণ হলেও এখনও জঙ্গিরা সরকার গড়েনি। দ্রুত সরকার গড়ার কাজ শেষ হবে জানিয়েছে তালিবান। কাবুল এখন বিশ্ব রাজনৈতিক ঘনঘটার কেন্দ্র। আফগানিস্তানে…

নিউজ ডেস্ক: আফগানিস্তানে তালিবান নিয়ন্ত্রণ হলেও এখনও জঙ্গিরা সরকার গড়েনি। দ্রুত সরকার গড়ার কাজ শেষ হবে জানিয়েছে তালিবান। কাবুল এখন বিশ্ব রাজনৈতিক ঘনঘটার কেন্দ্র। আফগানিস্তানে এই জঙ্গি তালিবান সরকারের প্রতি আগেই প্রচ্ছন্ন সমর্থন ইঙ্গিত দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

রুশ সংবাদ সংস্থা তাস জানাচ্ছে, আফগানিস্তানে এখন তালিবানই নিয়ন্ত্রক, এই বাস্তবতা মানছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। তবে ক্রেমলিন চায় আফগানিস্তানে যেন দ্রুত স্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি হোক।

এদিকে পুতিনের ইঙ্গিতপূর্ণ সমর্থন আসতেই কাবুলে তালিবান জঙ্গি নেতৃত্বের মধ্যে উল্লাস ছড়ায়। রাষ্ট্রসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যদের অন্যতম চিন ও রাশিয়া ক্রমে নিকট হচ্ছে তালিবানের।

রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে আফগান ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দুজনের মধ্যে দীর্ঘ টেলিফোনিক আলোচনা তৈরি করেছে বিশ্বজোড়া কৌতূহল। আন্তর্জাতিক মহলের প্রশ্ন ভারত কি আফগানিস্তানে সরকার গড়তে চলা তালিবানকে সমর্থন দেবে ?

Modi with putin

প্রধানমন্ত্রী মোদী আফগানিস্তান ইস্যুতে ২৬ অগাস্ট বৃহস্পতিবার সকালে সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছেন। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর জানিয়েছেন, বৈঠকে লোকসভা ও রাজ্যসভার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করবেন প্রধানমন্ত্রী।

আফগানিস্তানের টালমাটাল রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ভারতের উপর আর্থিক চাপ বিরাট। কারণ বিদেশে ভারতের সর্বাধিক বিনিয়োগের খাতায় আফগানিস্তান অন্যতম। বিদেশমন্ত্রক জানাচ্ছে, আফগানিস্তানে পরিকাঠামো নির্মাণে ভারত ৩০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে। আসন্ন তালিবান সরকারের আমলে আফগানিস্তানে সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক অবস্থান কী হবে, তা নিয়েও সর্বদলীয় বৈঠকে আলোচনা হবে।

সরকারে বিজেপি। তালিবান যখন ১৯৯৬-২০০১ পর্যন্ত প্রথমবার আফগানিস্তানে জঙ্গি নাশকতার সরকার কায়েম করেছিল সেই সময় ঘটেছিল কান্দাহার বিমান অপহরণের মতো মারাত্মক ঘটনা। ১৯৯৯ সালের সেই ঘটনার সময় প্রধানমন্ত্রী ছিলেন অটল বিহারী বাজপেয়ী। চাপের মুখে জঙ্গি নেতা মাসুদ আজহারের মুক্তির বিনিময়ে ভারতীয় যাত্রীদের জীবন বাঁচানো হয়।

ভারতে এখন এনডিএ সরকার। ক্ষমতার কেন্দ্রে বিজেপি। আফগানিস্তানে ফের তালিবান নিয়ন্ত্রণ শুরু। ফলে বাজপেয়ী জমানার সঙ্গে মোদী জমানার কূটনৈতিক অবস্থান নিয়েও চলছে আলোচনা।

মোদীর আহ্বানে সর্বদলীয় বৈঠকে সরকারপক্ষ বিজেপি ছাড়া বিরোধীদের মধ্যে কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস, ডিএমকে, সিপিআইএম, সিপিআই সহ বিভিন্ন দল থাকবে। সূত্রের খবর, এই বৈঠকে তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তা থাকছে। তিনি কী বার্তা দেবেন মোদীকে সেটি বিশেষ আলোচিত। তেমনই জম্মু-কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হবে। কারণ তালিবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী ও জঙ্গি সংগঠনগুলি তৎপরতা বেড়েছে।

তবে এই ধরণের আন্তর্জাতিক ইস্যুতে সিপিআইএমের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির বার্তা বিশেষ গুরুত্ব দেয় কেন্দ্র। ইউপিএ বা এনডিএ যে কোনও সরকারের আমলেই বিদেশ সংক্রান্ত নীতির উপর বারবার সরকারের দৃষ্টিভঙ্গির সূক্ষ্ম সমালোচনা করেন ইয়েচুরি।

কংগ্রেস কী বার্তা দেয় তাও লক্ষ্যনীয়। ইউপিএ আমলেই আফগানিস্তানে বড়সড় বিনিয়োগের সূত্রপাত হয়। ফলে রাহুল গান্ধীর অবস্থান নিয়েও চলছে আলোচনা।

এদিকে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে এখনও অনেক ভারতীয় আটকে রয়েছেন। তাদের ফিরিয়ে আনতে দিল্লি থেকে কাবুল পর্যন্ত বিশেষ বিমান পরিষেবা চালু করেছে সরকার।